দ্রুত পেটের চর্বি কমানোর 10 টি টিপস বিস্তারিত জানুন

পেটের চর্বি খাবারের মাধ্যমে কমানো যায়, তাই কোন খাবার খেলে পেটের চর্বি কমে? সেই ধরনের খাবার গুলো সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। চলুন, যে সকল খাবার চর্বি কমাবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
দ্রুত পেটের চর্বি কমানোর 10 টি টিপস বিস্তারিত জানুন
আপনার শরীরের যদি চর্বি বেশি হয়ে যায়, তাহলে উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস রোগ হতে পারে। নিয়ন্ত্রণ করার জন্য বিভিন্ন খাবার খেতে পারেন। তাই কোন খাবার খেলে পেটের চর্বি কমে? এ সম্পর্কে জানতে আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

পোস্টসূচিঃ দ্রুত পেটের  চর্বি কমানোর 10 টি টিপস বিস্তারিত জানুন

কোন খাবার খেলে পেটের চর্বি কমে

অনেকে পেটের চর্বি কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার খেয়ে থাকে কিন্তু কোন খাবার খেলে পেটের চর্বি কমে? এ সম্পর্কে হয়তো অনেকে জানেন না। চলুন, যে খাবার গুলো খেলে আপনার পেটের চর্বি কমে যাবে সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

ওজন কমানোর জন্য অনেকেই ব্যায়াম করে থাকেন, পাশাপাশি অনেক খাদ্য খেয়ে থাকেন কিন্তু সঠিকভাবে যদি প্রয়োগ না করা হয়, তাহলে ওজন আরো বাড়তে থাকবে। অনেকে কাজের ব্যস্ততার কারণে শারীরিক ব্যায়াম এবং খাদ্য অভ্যাসকে পরিবর্তন করতে পারে না। এর কারণে চর্বি হয়ে যায়। এ ধরনের চর্বি থেকে বাঁচার জন্য আপনাকে ডায়েট করতে হবে এবং শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। তবে কিছু খাবার খেলে আপনার পেটের চর্বি কমে যাবে, এটা অবশ্যই জানা প্রয়োজন। চলুন, শারীরিক ব্যায়ামের পাশাপাশি কিভাবে খাবারের মাধ্যমে পেটের চর্বি কমাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

যে খাবার গুলোর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে সেগুলো যদি খেতে পারেন, তাহলে আপনার রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকবে। ভিটামিন বি থাকার কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াবে। এছাড়াও আপনার শরীরকে খাবার পরিপূর্ণ ধরে রাখবে। যার কারণে অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ থাকবে না। এর কারণে আপনার পেটের চর্বি অনেকটা কমে যাবে। প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে আপনার পেটের চর্বি কমাতে আদা খেতে পারেন। এটা দেহের তাপমাত্রা ঠিক রাখবে, চর্বি কমানোর জন্য যে সকল উপাদান দরকার এই আদার মধ্যে তা রয়েছে। তাই দৈনিক চায়ের সাথে আদা খেতে পারেন।

আপনার শরীরকে সতেজ এবং সুস্থ রাখার জন্য, ওজন কমানো ও পেটের চর্বি কমাতে শসা খেতে পারেন। এর মধ্যে ক্যালরি কম থাকে এবং পেট ভরা মনে হয়, এজন্য অতিরিক্ত খারাপ ক্যালরিযুক্ত খাবারের প্রতি আকর্ষণ হবে না, পেট ভরা মনে হবে। এছাড়াও শরীর থেকে দূষিত উপাদান বের করবে। তাছাড়া শসার সাথে টাটকা বিভিন্ন ধরনের ফল এবং শাক সবজি খাওয়া দরকার। সকালবেলা যদি আপনি অন্যান্য ফল বা শাকসবজির সাথে এক বাটি পরিমাণ শসা খেতে পারেন। তাহলে আপনার শরীরের বিষাক্ত উপাদান গুলো বের করে দেবে এবং পেটের চর্বি অনেকটা কমে যাবে।

বিভিন্ন শাকের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ভিটামিন থাকে, বিশেষ করে খনিজ পদার্থ থাকে যা আপনার পেটের চর্বি কমানোর জন্য দারুন কাজ করবে। এজন্য আপনি পালং শাক খেতে পারেন, এর মধ্যে ফাইবার বেশি থাকে যার কারণে দীর্ঘক্ষন পেট ভরা মনে হবে। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণ ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা আপনার শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করবে। এজন্য ওজন ও চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। এছাড়া পেটের চর্বি কমাতে লাল মরিচ খেতে পারেন, এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মানসিক টেনশন এবং হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখবে। যা পেটের চর্বির সমস্যা দূর হবে।


যদি আপনি সকাল বেলা রসুন খেতে পারেন এতে পেটের হজম শক্তি বৃদ্ধি পাবে। এরপরে যদি হালকা লেবু পানি খাওয়া যেতে পারে, এজন্য আপনার মেদ অনেকটা কমে যাবে। এছাড়াও পেটের চর্বি কমাতে শীতের সবজি শিম খেতে পারেন । এই সবজি ওজন এবং চর্বি কমানোর ক্ষেত্রে দারুন কাজ করে। আপনি যদি প্রচুর পরিমাণে আমিষ যুক্ত খাবার খেয়ে থাকেন, সেটা আপনার শরীরের ওজন বৃদ্ধি পাবে। এজন্য আমিষ যুক্ত খাবারের পরিবর্তে যদি আপনি এই জাতীয় খাবার গুলো বেশি খেয়ে থাকেন তাহলে দেখবেন পেটের চর্বি থাকবে না।

পেটের চর্বি কমানোর জন্য আরো একটি সবজি করলা খেতে পারেন। এর মাঝে যে উপাদান থাকে তা ইনসুলিন নিয়ন্ত্রণ করতে দারুন কাজ করে থাকে। এটা যদি আপনি খেতে পারেন তাহলে রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং পেটের চর্বিও কমে যাবে। তারপর রান্না করে খেতে পারেন এবং এর জুসও খাওয়া যেতে পারে। এছাড়াও পেটের চর্বি কমাতে ব্রকলি খেতে পারেন। এর মাঝে প্রচুর পরিমানে ফাইবার থাকে যা আপনার তলপেটে যে চর্বিগুলো জমে থাকে তা কমাতে দারুন কাজ করবে। তারপর ফুলকপি খেতে পারেন, এর ক্যালরি কম ফাইবার বেশি থাকে। যার কারণে ওজন এবং পেটের চর্বি কমাতে কাজ করে।

আপনার পেটের চর্বি কমাতে আরো একটি সবজি গাজর খেতে পারেন। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে এবং ক্যালরি কম থাকে। এছাড়াও এর মধ্যে ভিটামিন, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা খেলে পেট ভরা মনে হবে এতে চর্বি কমবে। তাছাড়া আপনি লাউ খেতে পারেন। এর প্রচুর পরিমাণে পুষ্টি রয়েছে যা ক্যালরি কম থাকে এটা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে দারুণ কাজ করে এবং পেটের বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকার কারণে ক্যালোরি গ্রহণ করতে ইচ্ছে হয় না। যার কারণে ওজন চর্বি কমতে কাজ করবে।

হালকা পানীয় হিসেবে সবুজ চা খাওয়া যেতে পারে। এর মধ্যে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে যা আপনার পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করবে। তাছাড়া সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন। কেননা এর মধ্যে ওমেগা থ্রি অ্যামাইনো এসিড থাকে যা আপনার পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সাহায্য করবে এবং এর মাঝে যে ফ্যাট পাওয়া যায় তা আপনার শরীরের ওজন কমাতে এবং পেটের চর্বি কমাতে ভালো কাজ করবে। তাই নিয়মিত ভাবে সামুদ্রিক মাছ খেতে পারেন, এটা আপনার শরীরে চর্বি কমানোর পাশাপাশি আরো বিভিন্ন ধরনের উপকার করবে।

কোন ঔষধ খেলে পেটের চর্বি কমে

অনেকে জানতে চায় যে, কোন ঔষধ খেলে পেটের চর্বি কমে? আসলে এ বিষয়টি সবারই জানা প্রয়োজন। কেননা ওষুধ খাওয়ার পরে কি ক্ষতি হতে পারে এ সম্পর্কে চলুন বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

পেটের চর্বি কমানোর জন্য অনেকে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ খেয়ে থাকে কিন্তু এই ওষুধের অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া আছে সেটা হয়তো অনেকের জানা নেই। আপনার চর্বি কমে যাবে কিন্তু ওষুধের খাওয়ার কারণে যে কত বড় ক্ষতি হবে সেটা হয়তো জানলে আপনি পেটের চর্বি কমানোর জন্য ওষুধ আর খাবেন না। কেননা এই ওষুধ হল সাময়িকের জন্য কাজ করে থাকে। এই ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দিলে পুনরায় পেটের চর্বি বৃদ্ধি পাবে। তাহলে ওষুধ খাওয়াতে দীর্ঘস্থায়ী কোনো সমাধান পাবেন না। এই ওষুধ খাওয়ার কারণে আপনার হার্টের সমস্যা ডায়াবেটিস, হাই প্রেসার ইত্যাদি যদি থাকে, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

এই ওষুধ খাওয়ার কারণে আপনার মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারে, মস্তিষ্ক থেকে রাসায়নিক উপাদান নিঃসরণ করতে পারে। যার কারণে আপনার মনে হবে যে পেটে ক্ষুধা নেই, পেটটা ভরা লাগতে পারে। শুধুমাত্র এই ওষুধ খাওয়ার কারণেই এই ধরনের অনুভূতি হতে পারে কিন্তু এটা শরীরের জন্য অনেকটাই ক্ষতিকর। আপনার যদি অতিরিক্ত ওজন হয়ে থাকে যার কারণে ডায়াবেটিস বা হাই প্রেসার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে অথবা ডায়াবেটিস, প্রেসার রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে অবশ্যই ওজন কমানো প্রয়োজন।

এছাড়া পেটের চর্বি কমানোর জন্য ডাক্তাররা কিছু ওষুধ লিখে থাকে কিন্তু সেটা সাময়িকের জন্য। আপনি ওজন কমানোর জন্য সাধারণত ডায়েট করতে পারেন এবং শারীরিক ব্যায়াম করার মাধ্যমে কমানো সবচাইতে ভালো হবে। তবে পেটের চর্বি কমানোর জন্য সাধারণত যে ওষুধগুলো দেওয়া হয়ে থাকে কিন্তু একজন চিকিৎসকের পরামর্শে খাবেন। চলুন ঔষধ গুলো সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক; জিরো ফ্যাট ১২০ এমজি ক্যাপসুল, কোবিস ১২০ এম জি, ও স্ট্যাট ১৫০ mg, ওবেলিট ১২০ mg, অবিলিক্স ১২০ mg এই ঔষধ গুলো খেতে পারেন। তবে ওষুধগুলো খাওয়ার পূর্বে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ খেতে হবে।

ঘরোয়া উপায়ে পেটের চর্বি কমানোর উপায়

যারা বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার মাধ্যমে চর্বি কমাতে চান, ঘরোয়া উপায়ে পেটের চর্বি কমানোর উপায় সম্পর্কে তাদের জানা প্রয়োজন। চলুন, ঘরোয়া উপায় এর মাধ্যমে খাবার গুলো খেলে আপনার পেটের চর্বি কমবে এ সম্পর্কে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।
পেটের চর্বি কমানোর জন্য কাজে বাদাম খেতে পারেন, এই বাদাম এতটাই শরীরের জন্য উপকার করে যা আপনার খারাপ কোলেস্টেরল দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়া কিসমিস খেতে পারেন, এই ফলটি অত্যন্ত সুস্বাদু এবং শরীরের জন্য উপকার। যাদের চর্বি কমাতে চান তারা এই ফলটি খেতে পারেন। এটা রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটাতে কাজ করবে। এর মাঝে এক ধরনের নিউরো ট্রান্সমিটার থাকার কারণে খিদা কম লাগে এবং পেটের চর্বি কমাতে ভালো কাজ করবে। তাই দিনে তিন থেকে চারটি খেতে পারেন। এরপরে টমেটো খেতে পারেন, এই সবজিটি চর্বি কমানোর জন্য কাজ করে থাকে।

আপনার যদি অতিরিক্ত পেটের চর্বি হয়ে থাকে তাহলে কমানোর জন্য আপেল সিডার ভিনেগার খেতে পারেন। এটা আপনার শরীরের চর্বি গলাতে সাহায্য করবে, তবে যেকোনো খাবার খাওয়ার পূর্বে সামান্য পরিমাণ খেতে পারেন। তারপরে পুদিনা পাতা খেতে পারেন, এই পাতা এক ধরনের ছোট হয়ে থাকে যা সালাদের সাথে মিক্সড করে খেতে পারেন। এতে আপনার পেটের চর্বি দূর করতে সাহায্য করবে। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে যা আপনার দেহের ওজন কমাতে এবং চর্বি কমাতে ভালো ভূমিকা পালন করে থাকে।


কফি এর মাঝে ক্যাফেইন থাকে যা আপনার শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ ও পেটের চর্বি কমাতে কাজ করে থাকে। গবেষণায় দেখা গেছে এই কফি যদি খাওয়া হয় তাহলে আপনার শরীরের ১৬ শতাংশ চর্বি কমাতে সাহায্য করে। এরপরে পনির খেতে পারেন, এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম রয়েছে যা দুধের তৈরি হয়ে থাকে। এটা ওজন কমাতে কাজ করবে এছাড়াও গবেষণায় দেখা গেছে যে আপনি যদি সকালের নাস্তা এই পনির খেতে পারেন। এটা আপনার ফাইবারের কাজ করবে এবং পেটের চর্বি কমাতেও সাহায্য করবে।

পেটের চর্বি কমাতে কাঁচা কলা খেতে পারেন, এই সবজি অত্যন্ত হজমের ক্ষেত্রে কাজ করে থাকে। এটা অন্ত্রের ব্যাকটেরিয়া তৈরি করবে এবং পেট ভরা মনে হবে, এর মাঝে ভিটামিন বি৬ আছে যা আপনার শক্তি যোগাতেও সাহায্য করবে এবং পেটের চর্বি কমাতে ভালো কাজ করবে। এরপরে বাঁধাকপি খেতে পারেন। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে যা আপনার ওজন কমাতে এবং খারাপ কোলেস্টেরলকে দূর করতে সাহায্য করবে। এছাড়াও হজম প্রক্রিয়াকে দ্রুত বৃদ্ধি করবে, এছাড়াও আপনার পেটের চর্বি কমাতে সাহায্য করবে।

বাদাম ও অলিভ অয়েল যদি প্রতিদিন ফ্যাট জাতীয় খাবার গুলো খাওয়ার কারণে অতিরিক্ত পেটের চর্বি জমে যায়। এটা দূর করার জন্য বাদাম এবং অলিভ অয়েল খেতে পারেন। কেননা পুষ্টিবিজ্ঞানীগণ বলেছেন যে কোন ফ্যাট শরীরের জন্য ক্ষতি করে কিন্তু সকল ফ্যাট কিন্তু ক্ষতি করবে না। এর মধ্যে প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট মিনারেল যুক্ত খাবার গুলো থাকে যা আপনার পেটের চর্বি বৃদ্ধি করবে না। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ ডি কে ই আছে যা আপনার শরীরের প্রয়োজন। তাই প্রতিদিন খাওয়ার তালিকা ক্ষেত্রে কাঠবাদাম চিনা বাদাম, শিমের বিচি খেতে পারেন। এছাড়াও অলিভ অয়েল তেল খেতে পারেন।

কোন ফল খেলে চর্বি কমে

সকালবেলা যদি লেবুর রস বের করে পানির সাথে মিশিয়ে খেতে পারেন, এতে আপনার চর্বি কমতে ধারণ কাজ করবে। এজন্য আপনি একগ্লাস হালকা কুসুম গরম পানির মধ্যে লেবুর রস ও হালকা একটু লবণ মিশিয়ে নিতে পারেন। তবে প্রতিদিন সকালবেলা যদি এক গ্লাস লেবুর শরবত খেতে পারেন তাহলে চর্বি অনেকটাই কেটে যাবে। চর্বি কমানোর জন্য লাল আপেল খেতে পারেন, কেননা এর মধ্য প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে যা আপনার পেটের চর্বি কমানোর জন্য সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের এক গবেষণায় দেখা গেছে যে ১০ গ্রাম এই ফল পাঁচ বছরে প্রায় ৩৫ শতাংশ চর্বি নিয়ন্ত্রণ থাকবে।

চর্বি কমানোর জন্য ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খাওয়ার প্রয়োজন, তার মধ্যে আপনি পেয়ারা খেতে পারেন। এর মাঝে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে যা আপনার প্রোটিনের বিকল্প হিসেবেও খেতে পারেন। এছাড়া আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ভিটামিন সি যুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন। তাই খাদ্য তালিকায় পিয়ারা রাখতে পারেন। তারপরে তরমুজ খেতে পারেন, এই ফলটি অত্যন্ত উপকারী একটি ফল যা আপনার প্রায় ৯০% পানি এর চাহিদা পূরণ করতে কাজ করে থাকে। যা পাকস্থলীকে ভালো রাখে এবং ক্ষুধা মুক্ত করে খুদা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও পেটের অতিরিক্ত চর্বি কমাতে কাজ করবে।

আপনার শরীরে বা পেটে চর্বি হয়ে থাকে সে ক্ষেত্রে খেজুর খেতে পারেন। এর মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি ডায়েট করার জন্য যে উপাদান থাকা দরকার সেটা থাকে। এর মাঝে যে ক্যালোরি থাকে সেটা খুবই কম যে আপনার ক্ষুধা লাগবে না। এজন্য সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে কয়েকটা খেজুর খেতে পারেন। খেজুর খিদা কমানোর জন্য ওজন নিয়ন্ত্রণ থাকবে এবং প্রতিদিন চার থেকে পাঁচটি খেজুর খাওয়া যেতে পারে। তা আপনার ওজন কমবে এবং পেটের চর্বি কমাবে। তাছাড়া খেজুর আরো বিভিন্ন ধরনের শরীরে উপকার করে থাকে। তাই সুস্থ মানুষ দিনে তিন থেকে চারটি খেজুর খেতে পারেন।

পেটের চর্বি বাড়ে কেন

বিভিন্ন কারণে পেটের চর্বি বাড়তে পারে। তাই পেটের চর্বি বাড়ে কেন? এ সম্পর্কে জানা আমাদের প্রয়োজন। কিভাবে আমাদের পেটের চর্বি বৃদ্ধি পায় সেটা জানার প্রয়োজন। চলুন, পেটের চর্বি বাড়ার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

আমাদের শরীরে সাধারণত পেটে চর্বি জমে থাকে এবং এ চর্বি অনেকদিন স্থির থাকতে পারে। এই চর্বি শেষ হবে তখনই যখন আপনার পেটে আর কোন ক্যালোরি যুক্ত হবে না। যদি আপনি পেটের চর্বি কমাতে চান সেক্ষেত্রে নতুন করে আর কোন ক্যালরিযুক্ত খাবার খাবেন না। তাহলে আপনার অতিরিক্ত যে চর্বি জমা হয়ে থাকে সেটা থেকে নষ্ট হয়ে যাবে। আমরা যেহেতু প্রতিনিয়তই ক্যালোরি খাবার খেয়ে থাকি, যার কারণে আমাদের শরীরের ভিতরে যে চর্বি বা ক্যালোরি রয়েছে সেগুলো খরচ হয় না। কেননা পেটের চর্বি সাধারণত নড়াচড়া কম করে থাকে, এর কারণে মেদ জমা হয়।


আমরা অনেকে অফিসের কাজে সার্বক্ষণিক বসে থাকি অথবা এমনিতেই বসে টেলিভিশন দেখি দীর্ঘ সময় বসে থাকি, হাটাহাটি কম করি যার কারণে পেটের চর্বি বৃদ্ধি পায়। আবার অনেকে কোমল পানিও বেশি খেয়ে থাকে, ফাস্টফুড জাতীয় খাবার খায় তার সাথে কোমল পানীয় পান করে থাকে, এজন্য পেটের চর্বি বৃদ্ধি পাবে। এই সকল খাবার গুলোতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালরি থাকে। যা পেটের চর্বি বৃদ্ধি করতে পারে। যারা অতিরিক্ত টেনশন করে থাকে তাদের মানসিক চাপের কারণে দেখা যায় যে চর্বি বৃদ্ধি পায়। যেগুলো পেটের চর্বি বৃদ্ধি পারে যেমন ফুচকা, চিপস, ফাস্টফুট জাতীয় খাবার খাওয়া।

পেটের চর্বি কমানোর নিয়ম

অনেকের পেটের চর্বির সমস্যা দেখা যায়। তাই পেটের চর্বি কমানোর নিয়ম সম্পর্কে আপনাকে জানতে হবে এবং কিভাবে খাবার খেলে আপনার চর্বি কমবে সে সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে জেনে নেওয়া যাক।

পেটের চর্বি কমানোর জন্য অবশ্যই আপনাকে খাদ্য পরিবর্তন করতে হবে এবং নিয়মিতভাবে শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। এছাড়াও নিয়মিতভাবে হাঁটবেন তাহলে দেখবেন আপনার চর্বি আস্তে আস্তে কমে যাবে। এছাড়াও চর্বি কমানোর জন্য অনেকেই অপারেশন করে চর্বি ফেলে দিয়ে থাকে কিন্তু এর পরেও দেখা যায় চামড়ার নিচে চর্বি থেকে যায়। তাই পেটের চর্বি কমানোর জন্য অবশ্যই খাওয়া-দাওয়া নিয়ম তান্ত্রিকভাবে খেতে হবে এবং শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। খাওয়া দাওয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হলে অবশ্যই ভাত রুটি, বিস্কুট, ব্রেড জাতীয় খাবার গুলো কমিয়ে নিয়ে আসতে হবে।

পেটের চর্বি কমানোর জন্য দিনের বেলায় একবার ভাত খাওয়া যেতে পারে, রাতে বেলায় কষ্ট করে হলে ভাত খাবেন না। এছাড়াও ভাত রুটি কিছুই রাতের বেলায় খাওয়ার দরকার নেই। রুটিতে কার্বোহাইডেট আছে যার কারণে আপনার ওজন বৃদ্ধি পেতে পারে। তাছাড়া সারাদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাসের মত পানি খেতে হবে। এছাড়া খাবারের মাঝখানে অল্প পরিমাণ পানি খেতে পারেন। সবচেয়ে ভালো হয় খাবারের আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিবেন, এতে করে আপনার পেট ভরা মনে হবে এবং খাবার কম খাবেন। তাছাড়া আপনার খাদ্য তালিকায় কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার গুলো কমিয়ে দিতে হবে।

চর্বি কমানোর জন্য ফাইবার যুক্ত খাবার গুলো বেশি বেশি খেতে হবে যেমন শাকসবজি জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে সবচাইতে বেশি ফাইবার থাকে। এছাড়া ইসবগুলের ভুষি, তোকমা দানা ইত্যাদি জাতীয় খাবার গুলো খেলে আপনার পেট ভরা মনে হবে এবং ক্ষুধা কম লাগবে। যার কারণে পেটের চর্বি কমে যাবে। উপরোক্তা খাবার গুলো খাওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই আপনাকে হাটা চলাফেরা করতে হবে হাঁটতে হবে। দ্রুত হাঁটা চেষ্টা করবেন এছাড়াও শারীরিক ব্যায়াম করবেন, কমপক্ষে ৩০ মিনিট প্রতিদিন দ্রুত হাঁটতে হবে। এছাড়া চর্বি জাতীয় খাবার গুলোর মধ্যে যেমন চিনি শরীরের কার্বোহাইডেট বৃদ্ধি করে।

শরীরের চর্বি কমাতে তেল জাতীয় খাবার গুলো অতিরিক্ত খাবেন না, এতে চর্বি বৃদ্ধি পেতে পারে। এজন্য আপনি খাবারের তেলের পরিবর্তে মাখন বা ঘি দিয়ে রান্না করতে পারবেন কিন্তু আটা বা ময়দা বা সুজি ভাত জাতীয় খাবার গুলো খুবই কম খাবেন। দিনের বেলায় একবেলা অল্প পরিমাণ খেতে পারেন। রাতের বেলায় খাবেন না, সকালের নাস্তায়  ডিম সিদ্ধ খেতে পারেন। তরকারি জাতীয় খাবার বেশি খাবেন, মাছ মুরগি, শাকসবজি বেশি খাবেন, ভাত রুটি কম খাবেন, তাহলেই ওজন কমবে। এভাবে যদি আপনি তিন থেকে চার মাস রুটিন অনুযায়ী খেতে পারেন তাহলে আপনার পেটের চর্বি অনায়াসে কমে যাবে।

দৌড়ালে কি পেটের চর্বি কমে

পেটের চর্বি কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করতে হয়। তাই দৌড়ালে কি পেটের চর্বি কমে? কিভাবে আপনি চর্বি কমাবেন সেই ধরনের ব্যায়াম করা প্রয়োজন। চলুন, দৌড়ানোর মাধ্যমে কিভাবে চর্বি কমাবেন সে সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

আপনি যদি প্রতিদিন হাটাহাটি করেন সেক্ষেত্রেও ওজন কমবে অথবা পেটের চর্বি কমতে থাকে কিন্তু আস্তে আস্তে দৌড়াতে থাকেন সেই ক্ষেত্রে পেটের চর্বি কমতে থাকবে। তবে এই ক্ষেত্রে ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন, এক্ষেত্রে দ্রুত আপনার পেটের চর্বি কমতে থাকবে। কেননা এ সময় পেটের উপর অনেক চাপ পড়ে যার কারণে চর্বি কমতে থাকে। এছাড়াও চর্বি জাতীয় খাবার গুলো খাবেন না। যারা পেটের চর্বি কমাতে চাচ্ছেন অবশ্যই তারা দৌড়াতে পারেন। এক্ষেত্রে অবশ্যই দৌড়ালে আপনার অনেক ক্যালরি খরচ হবে। যার কারণে আপনার চর্বি অনেক কমে যাবে।

পেটের চর্বি কমাতে আরো একটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন তাহলো; আপনি সাইক্লো চালাতে পারেন অথবা সিঁড়ি দিয়ে উপর দিকে উঠতে পারেন, এক্ষেত্রে আপনার পেটের চর্বি কমতে থাকবে। এছাড়াও দৌড়ানোর পাশাপাশি অবশ্যই ক্যালরি যুক্ত খাবার গুলো কম খাবেন এবং ফাইবারযুক্ত বেশি খাবার খাবেন। একজন মানুষ প্রতিদিন যদি ৩০ মিনিট করে হাঁটতে পারে সে ক্ষেত্রে তার শরীর থেকে ২০০ ক্যালোরির মতো খরচ হয়। এতে আপনার পেটের চর্বি অনেকটাই কমে যাবে এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকবেন। তাই অবশ্যই প্রতিনিয়ত হাঁটার এবং দৌড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন।

পেটের চর্বি কমানোর বেল্ট

অনেকের পেটের চর্বি কমানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করে। তাই পেটের চর্বি কমানোর বেল্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। এটা এক ধরনের ব্যায়াম যা আপনার পেটের চর্বি কমবে, চলুন, এ বিষয়ে জেনে নেওয়া যাক।
পেটের চর্বি কমানোর জন্য এক ধরনের বেল্ট পাওয়া যায় সেই বেল্ট আপনি ব্যবহার করতে পারেন। তবে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে ভালো মানের বেল্ট ব্যবহার করতে হবে এবং এই বেল্ট ব্যবহারের পদ্ধতির সম্পর্কে জানতে হবে। তাছাড়া আপনার শরীর আরো ক্ষতি হবে। কেননা এই বেল্ট যদি শক্ত করে বেধে ফেলেন, সেই ক্ষেত্রে পেটের চর্বি বোঝা যাবে না। তবে বেল দিয়ে যদি কমাতে চান সে ক্ষেত্রে উপকার আছে কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে। যদি আপনার পেটের উপর চাপ লাগে সেক্ষেত্রে ক্ষতি হতে পারে এবং এই অবস্থায় খাবার খেলে পাকস্থলীতে গিয়ে অসুবিধা সৃষ্টি করতে পারে।


তবে বেল্টের মাধ্যমে চর্বি কমানোর চেয়ে আপনি খাদ্য অভ্যাস পরিবর্তন ও শারীরিক ব্যায়াম করবেন। দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার পেটের চর্বি কমে যাবে। এ বেল্ট ব্যবহার করার কারণে অনেকের ঘাম হতে থাকে যার কারণে কিছুটা হলেও আপনার হালকা মনে হবে। এতে করে অনেকেই হয়তো বলে থাকে যে পেটের চর্বি গলে যায় কিন্তু এটা অবৈজ্ঞানিক কথা। কেননা এই ধরনের বেল্ট এখন পর্যন্ত সৃষ্টি হয়নি যা পেটের মেদ কমাবে। তবে যদি খাবারের পরিবর্তন না করেন, ক্যালরিযুক্ত খাবার বেশি খান তাহলে ওজন কখনোই কমবে না। পাশাপাশি খাদ্যের পরিবর্তন করতে হবে।

শেষ কথা

পরিশেষে বলা যায় যে, যদি আপনি পেটের চর্বি কমাতে চান তাহলে অবশ্যই খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন করতে হবে এবং শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে। তাহলে আপনার ওজন দ্রুত কমতে থাকবে এবং পেটের চর্বিও কমে যাবে। পেটের চর্বি কমানোর জন্য পুষ্টিবিদদের পরামর্শ নিতে পারেন। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি রয়েছে যা একজন চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে চেষ্টা করতে পারেন। তাই কোন খাবার খেলে পেটের চর্বি কমে? এ সম্পর্কে আজকের আর্টিকেলে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি, আশা করি আপনার উপকারে আসবে। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url